নরসিংদী প্রতিনিধি :
নরসিংদীতে হাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সদস্য সচিব মেহেদী সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিওিহীন সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি ও দলীয় নেতাকর্মীরা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে হাজীপুর সমবায় বহুমুখী শ্রমিক সংগঠন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সদস্য সচিব মেহেদী সরকার লিখিত বক্তব্যে বলেন, রবিবার (১৩ এপ্রিল) মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন ইউনিয়ন শ্রমিকদলের আহবাযক জামাল ও তার ভাই সাদ্দাম। এছাড়া বেশ কিছু দিন আগে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।
আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, হাজীপুর কাঠবাজারে এক ব্যাবসায়ীর কাছে আমি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করি এবং সে চাঁদা না দেওয়ায় তার উপর হামলা করেছি যা মিথ্যা ও বানোয়াট। আসলে মূল বিষয়টি তাদের পারিবারিক ব্যাপার। হাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিকদলের আহবায়ক জামালের মেয়েকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার সাথে ঝামেলা শুরু হয় এবং আমার রাজনীতির ভাবভঙ্গি নষ্ট করার জন্য এই অপপ্রচার করছে৷
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সাদ্দাম যাকে মানুষ গাল কাটা সাদ্দাম হিসেবে চিনে সে বিগত ৫ আগস্টের পূর্বে হাজীপুর ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামের হত্যাকারী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ইউসুফ খান পিন্টুর সাথে বিভিন্ন সভায় তাকে দেখা যেতো। বর্তমানেও তার সাথে তার রয়েছে যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রমাণ মিলে। এখনও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে গোপনে তাদের সাথে আতাত করে যাচ্ছে। একদিকে সে সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। অন্যদিকে ইউনিয়ন শ্রমিক দলের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে পুরো ইউনিয়নে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে। আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদেরকে অবগত করেছি।
এছাড়া তাদের সুদি ব্যবসার কথা কারো অজানা নয়। হাজীপুর কাঠ বাজারের ব্যবসায়ীদের সুদের টাকার জন্য নানাভাবে নির্যাতন ও অত্যাচার করা তাদের নিত্যদিনের কাজ। এসব বিষয় আমরা আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ বিষয়ে সুস্থ তদন্ত করে এর বিচার করা হোক।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহবায়ক মো. ডালিম মিয়া, ওসমান সরকার, ইউনিয়ন শ্রমিক দল নেতা জনি মিয়া, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা টিপু সুলতান, হাজীপুর কাঠ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি মারুফ সরকারসহ ইউনিয়ন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।
এ ব্যাপারে হাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে তার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন কে ফোন করলে তিনি বলেন আসলে হাজীপুর কাঠ বাজারে আমি একটি ঘর তুলি যা সরকারি জায়গায় আসলে ওই জায়গার প্রকৃত মালিক হচ্ছে মতিন সরকাররা। আমি তাদেরকে অনেক বুঝিয়ে শুুনিয়ে জায়গাটি তাদের কাছ থেকে নিয়ে ঘরটি তুলি। ওই ঘর তোলার কারণে তারা প্রায় সময় আমার কাছ থেকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা দাবি করতো। এক পর্যায়ে মেহেদী আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চায়। ওই টাকা না দেওয়ায় গত চার এপ্রিল হাজীপুর বেঙ্গল মিলে সামনে লোকজন নিয়ে মেহেদী আমাকে মারধোর করে এবং আমার গাড়িটি ভেঙে ফেলে গাড়ির চাবিও তারা নিয়ে গেছে। সেটি এখনও স তাদের কাছে।
আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ খান পিন্টুর সাথে তার সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ইউসুফ খান পিন্টুর সাথে কখনোই আমার কোন সম্পর্ক ছিল না। আর আপনাদের কাছে উপস্থাপন করেছে তা হলো আমার ওয়াইফের হবি হচ্ছে সবাইকে ফেসবুকের মাধ্যমে জন্মদিনের উইশ জানানো। সে মোবাইল থেকে ভুলক্রমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালে আমার চোখে পড়ার সাথে সাথে আমি সেটি ডিলেট করে দেই। কিন্তু এর আগেই তারা সেটি স্ক্রিনশট দিয়ে রেখেছে। সেটাই এখন দেখি আমারকে আওয়ামী লীগের দোসর প্রমান করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
থানায় অভিযোগ করার এতোদিন পরে রবিবার সংবাদ সম্মেলন কেন করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে আমাকে মারধোর করার পরে আমি বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলাম। তাছাড়া ইতিমধ্যে আমাকে আবার হুমকি দেওয়া শুরু করেছে এজন্যই বাধ্য হয়ে গতকাল এই সংবাদ সম্মেলন করি।