নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীর শিবপুরে কোন অনুমতি বা টেন্ডার ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার ৪০নং আশ্রাফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছমা বেগম গত ৩০ অক্টোবর কাউকে কিছু না জানিয়ে বিদ্যালয়ের দুটি কাঁঠালগাছসহ ৫টি গাছ বিক্রি করে দেয়। এব্যাপারে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কবির হোসেন ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) উপজেলা শিক্ষা (প্রা.) কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে জানা যায়, শিবপুর পৌর এলাকার আশ্রাফপুর গায়েবী মসজিদের পাশ্ববর্তী
৪০নং আশ্রাফপুর গায়েবী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি মাঠের পূর্ব দিকে উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি একটি ভবন যা পশ্চিম দিকে মুখ করে অবস্থিত। এছাড়া মাঠের উত্তর পাশে পূর্ব-পশ্চিমে দক্ষিনমুখি আরো একটি নতুন ভবন রয়েছে যা উদ্ভোধনের অপেক্ষায় আছে। নতুন ভবনটি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের সময় যে সকল গাছ কাটা হয়েছিল তা উর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষে অনুমুতি সাপেক্ষে কাটা হয়েছে। সরকারী দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রির অপেক্ষায় কাটা গাছ গুলো এখনো স্কুল মাঠে পড়ে আছে। একই মাঠের পশ্চিম সীমানা পেরিয়ে আশ্রাফপুর গায়বী মসজিদ নিজস্ব সীমানায় ভিতরে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের সীমানার পশ্চিম দিকে অবস্থিত যে ২টি আকাশি, ১টি মেহগনি ও ২টি কাঠাল গাছ (মোট ০৫টি) যাহা বিদ্যালয় সীমানার ভিতরে অবস্থিত যে গুলো বিদ্যালয় ও মসজিদ সীমানা প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। বিদ্যালয় ও মসজিদের সীমানা প্রাচীর হয়ে দাড়িয়ে থাকা এই গাছগুলো গত ৩০ অক্টোবর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা বেগম কাউকে কিছু না জানিয়ে কিংবা কোনরকম টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করে দেন। বিদ্যালয় এর অন্যান্য শিক্ষকদেরকে আসতে দেখে গাছগুলো সরিয়ে নিতে প্রধান শিক্ষককে বেপারীদেরকে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে।
গাছ বিক্রয়ের এই বিষয়টাকে ধামাচাপা দিতে মসজিদের গাছ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এমনকি গাছের গুড়ি পর্যন্ত মাটি থেকে উপরে ফেলাসহ গর্তগুলো মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়। গাছ কাটার কোন চিহ্ন বা আলামত না থাকে। এদিকে প্রধান শিক্ষক আসমা বেগম গাছগুলোর মসজিদের এমনটা বলার জন্য এলাকাবাসীকে শিখিয়ে পরিয়ে দেন।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মনোয়ারা বেগম ও আব্দুল হাই মাষ্টার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, গাছগুলো আশ্রাফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রোপণ করেছেন।তাদেরই নিয়মিত পরিচর্যায় সেইগুলো বেড়ে উঠেছে।
আশ্রাফপুর গায়েবী মসজিদের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া জানান, এই গাছগুলো মসজিদের, মসজিদ কমিটি বিক্রি করেছে।
বন বিভাগের কার্যালয় সূত্র জানায়, সরকারি অফিসের কোনো গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এরপর বন বিভাগে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদন সরেজমিন যাচাই-বাছাই পূর্বক গাছের মূল্য নির্ধারণ করে কাটার অনুমোদন দেয় বন বিভাগ। আশ্রাফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের সময় কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে। সে গাছগুলো বিক্রয় জন্য টেন্ডারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া অন্য কোন গাছ বিক্রি করে থাকলে সেটা আমার অবগত নয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিরন ভূঁইয়া জানান, আমি জানি গাছগুলো স্কুলের না, মসজিদের।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আছমা বেগম, মোবাইল ফোনে বলেন, আমি অফিসিয়াল বিষয়ে অফিসে উপস্থিত না হয়ে কিছু বলতে চাই না। আপনার কিছু জানার থাকলে অফিসে আসবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা (প্রা.)কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ রুহুল সগীর জানান, ৪০নং আশ্রাফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচটি গাছ কাটার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত-পূর্ব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।