নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীর রায়পুরায় দেড় বছরের শিশুসহ মায়ের বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন-সায়দাবাদ প্রধান বাড়ির রাকিব মিয়ার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম (২৪) ও তার দেড় বছরের শিশু সন্তান আহসাফ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি একটি এনজিও সংস্থা থেকে গৃহবধূ ফেরদৌসী বেগম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। পরে ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য তার জুয়াড়ি স্বামী রাকিবকে বলেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শুরু হয়। কলহের জেরে সকালে স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম প্রথমে দেড় বছর বয়সী একমাত্র শিশু সন্তান আহসাফকে বিষপান করা এবং পরে নিজে পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে বমি করতে থাকে। এসময় মা ফেরদৌসী বেগম প্রতিবেশি এক মহিলাকে বিষ পানের কথা জানিয়ে শুধু তার সন্তানকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য মা ফেরদৌসী বেগমকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন।
খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় বিষক্রিয়াল ফলে মা ও সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ।
নিহত গৃহবধূর বাবা মো: আবদুল্লাহ জানান, সাংসারিকভাবে আমার মেয়ে যাতে কষ্ট না করে তাই পারিবারিক স্বচ্ছলতার জন্য দেড় লাখ টাকা দিয়ে তার স্বামীকে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছিলাম। কিছুদিন যেতে না যেতেই তা বিক্রি করে দেয় স্বামী রাকিব। মেয়ের স্বামী একজন জুয়ারী ছিলেন। এজন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক বাপ্পি কবিরাজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ দুটো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে আসার পর ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।