মাসুম ভূঁইয়া
নরসিংদীর বেলাবতে নিখোঁজের ৭ দিন পর সোহানা আক্তার নামে চার বছরের এক শিশু কন্যার নদীর তীরে ঝোঁপের মধ্য থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে বেলাব থানা পুলিশ। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের মেরাতলীকান্দা গ্রামের একটি ঝোঁপ থেকে ওই শিশু মহদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সোহানা ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার টেঙ্গাপাড়া গ্রামের সোহেল মিয়ার মেয়ে। জন্মের পর থেকে সে বেলাব উপজেলার মেরাতলীকান্দা গ্রামে তার নানা মাসুদ মিয়ার বাড়িতে বসবাস করতো। তার মা সুমি আক্তার ও বাবা সোহেল মিয়া গাজীপুরের টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
শিশুটির স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে নানার বাড়ির অদূরে মেরাতলীকান্দা সড়কের পাশে একটি কালভার্টের পাশে বসে শিশুটিকে কান্না করতে দেখেন প্রতিবেশিরা। এরপর থেকে নিখোঁজ হয় শিশু সোহানা। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর তাকে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে প্রতিবেশিরা বাড়ির পাশে আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে জমিতে কাজ করতে যায়। এসময় পচা দুর্গন্ধ পেয়ে ঝোঁপঝাড়ের মধ্যে চোখ উপড়ানো অবস্থায় শিশুর লাশ দেখতে পায় তারা। লাশের একটু দূরেই পড়েছিল শিশুটির পড়নের হাফপ্যান্ট। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা শিশুটির লাশ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশে খবর দিলে বেলাব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শিশুর অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী ও শিশুটির পরিবারের সদস্যদের ধারনা শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতন শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে।
শিশু সোহানার নানা মাসুদ মিয়া বলেন, নিখোঁজের পর থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ আড়িয়াল খাঁ নদে নাতীকে খোঁজ করতে বলেন। পরে আর জিডি করা হয়নি। আমার শিশু নাতনীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে বলে ধারনা করছি।
নিহত শিশুটির বাবা সোহেল মিয়া বলেন, আমি স্ত্রীকে নিয়ে টঙ্গীতে ভাড়া বাসায় থেকে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমার শিশু সন্তান সোহানা তার নানা-নানীর কাছেই থাকতো। আমার নিষ্পাপ শিশুটিকে যারা নির্যাতন করে হত্যা করেছে তাদের খুজেঁ বের করে ফাঁসি দাবী করছি ।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তানভীর আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এলাকাবাসী অনেকেই বলেছেন যেদিন শিশুটি নিখোঁজ হয় সেদিনও তার পড়নে কাপড় ছিল না। শিশুটিকে ধর্ষণ করে হত্যার ধারনা ভুল হতে পারে। পুলিশ এই হত্যাকান্ডের তদন্ত করছে, এব্যাপারে এখনো মামলা হয়নি।