নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীর বেলাবতে অহিদুজ্জামান ওরফে অমৃত (৬৫) নামে এক নেশাগ্রস্ত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার স্ত্রী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রী আয়েশা আক্তার (৪৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের নিলক্ষীয়া গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত অহিদুজ্জামান বেলাব উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের নিলক্ষীয়া গ্রামের মৃত মো. সুলতান মিয়ার ছেলে। নিহত অহিদুজ্জামান প্রতিদিনই মাদক সেবন করতেন বলে তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার দাবি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল-আমিন জানান, গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে থানা পুলিশ সংবাদ পায় নিলক্ষীয়া গ্রামে বাড়ির পাশে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ পড়ে আছে। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় লাশটি অহিদুজ্জামানের। লাশ উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক তদন্তে নামে পুলিশ। এসময় নিহতের বাড়ির ঘরের দরজায় সামান্য রক্তের দাগসহ কিছু আলামত দেখে হত্যাকান্ডটি ঘরের ভেতরেই ঘটেছে এমনটাই সন্দেহ পুলিশের। এসময় পুলিশ নিহতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করেন এবং হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
মো. আল-আমিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা আক্তার পুলিশকে জানায় স্বামী অহিদুজ্জামান ওরফে অমৃত নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রতি রাতেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে ঘরে এসেই তাকে গালিগালাজসহ ঝগড়া শুরু করে দেন।ঝগড়ার একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝগড়া ও হাতাহাতির সময় স্বামী অহিদুজ্জামান ঘরে থাকা দা নিয়ে আয়েশাকে কোপ দিতে যায়। এ সময় স্ত্রী তা ফিরাতে গিয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে আয়েশা তাঁর স্বামী অহিদুজ্জামানের হাত থেকে দা ছিনিয়ে নিয়ে তার গলায় কোপ বসিয়ে দেন। এতে তিনি খাটের ওপর লুটিয়ে পড়েন এবং অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তার শরীর নিস্তেজ হয়ে মৃত্যূর কোলে ঢলে পড়েন।
স্বামী অহিদুজ্জামানের মৃত্যূ নিশ্চিত হওয়ার পর লাশটি আয়েশা আক্তার তার মরদেহ কোলে তুলে বাড়ির উঠানে নিয়ে ফেলে আসেন। পরে ঘরে ফিরে রক্ত লেগে থাকা খাটের কম্বল ও কাঁথা একটি বালতিতে করে টিউবওয়েলে নিয়ে ধুইয়ে ফেলের। হত্যায় ব্যবহৃত দা ধুইয়ে মুছে খাটের নিচে রেখে দেন। সবকিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে রাখার পর আবার খাটে শুয়ে পড়েন তিনি। হত্যার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ঘরের বাইরে বের হয়ে এসে প্রতিবেশীদের জানান, কে বা কারা তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা আক্তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এই হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের ছেলে ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে মা আয়েশা আক্তারকে আসামী করে বেলাব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামী আয়েশা আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।া