মনিরুজ্জামান,নরসিংদীঃ
শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হওয়া বুলবুল আহমেদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে বইছে শোকের মাতম।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে দাবী করলেও এটির পেছনে অন্য কারন আছে এবং এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবী তার পরিবারের।
সোমবার(২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়টির লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নরসিংদীর ছেলে বুলবুল। দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে দাবি করে রাতে সিলেটের জালালাবাদ থানায় অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি মামলা দায়ের করে। কিন্তু এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবী করছে নিহতের পরিবারের। এব্যাপারে
জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহত বুলবুলের পরিবারও এলাকাবাসী।
গত ৭ মাস আগে মারা যান বুলবুলের পিতা ওয়াহাব মিয়া। তারপর, একমাত্র বড় ভাইয়ের বেসরকারি চাকুরি ও বুলবুলের টিউশানির টাকায় চলত তাদের ৫ সদস্যের সংসার।
আদরের ছোটভাই শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের মৃত্যুর খবর শোনার পর নিজ বাড়ি নরসিংদী সদরের চিনিশপুরে এভাবেই আহাজারি করছেন বড় বোন সোহাগী আক্তার। স্বপ্ন ছিলো, বুলবুল বিসিএস ক্যাডার হবেন। হাল ধরবেন নিম্মবিত্ত এই সংসারের, সেই স্বপ্ন মুছে গেলো দুস্কৃতিকারীদের ছুরিকাঘাতে। অপরদিকে মা ইয়াসমিন বেগমের কাছে গতকালই নতুন জুতা কেনার টাকা চেয়েছিলো বুলবুল। নিম্মবিত্ত মা সেই শখ পূরণ করতে পারেনি। বারবার আফসোস করে একই প্রলাপ বকছেন তিনি।
মেধাবী শিক্ষার্থী বুলবুল ২০১৬ সালে নরসিংদী সদরের কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১৮ সালে আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাঁস করেন। একই বছর ডিসেম্বরে ভর্তি হন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে।
আজ রাত নয়টায় নিহতের জন্মস্থান মাধবদীর কাঠালিয়ায় জানাজার নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয় ।