নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা, প্রত্যয় এবং লক্ষ্য। যেকোনও ঝুঁকি কমিয়ে উন্নয়নকাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। মানুষের নিরাপত্তা দেওয়াই হচ্ছে আমাদের প্রচেষ্টা। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ যতটা এগিয়ে যাবে, মানুষ ততটা ভালো থাকবে।’ এ সময় ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্বমন্দা মোকাবিলার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২-এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্যদিকে অপর প্রান্তে প্যারেড গ্রাউন্ডে অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বরাষ্ট্র সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, ফায়ার সার্ভিস মহাপরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
‘দুর্ঘটনা-দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ শুরু হয়েছে।
দুর্ঘটনা-দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ শুরু হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন তৈরির যে ঘোষণা আমরা দিয়েছিলাম, তা এখন শেষ পর্যায়ে। যারা এ কাজে সম্পৃক্ত, তারা যেন উন্নত প্রশিক্ষণ পায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সংখ্যা ৪৯১টি। আরও ৫২টি ফায়ার স্টেশন চালু করা হবে। ফলে দেশে সাত শতাধিক স্টেশন হবে।’
চট্টগ্রাম কনটেইনার ডিপোতে জীবন উৎসর্গকারী সদস্যদের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগকালীন অগ্নিনির্বাপণের চেষ্টা চালিয়ে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত আমাদের যেসব ফায়ার ফাইটার চট্টগ্রাম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সময় তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, বিশেষ করে সোহেল রানা, ফায়ার ফাইটার আবদুল মতিন, ডুবুরি আবদুল মতিনসহ ১৩ জন অগ্নিবীরকে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি মনে রাখবে। কারণ মানুষের জন্যই জীবন দিয়ে গেছেন। তাদের পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসকে আরও যুগোপযোগী করা একান্তভাবে প্রয়োজন। সেই পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এবং সেবার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারণ করার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ফায়ার সার্ভিসকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা জীবন আগুন ও ধোঁয়ায় কাজ করতে হয় বিধায় এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অনেকেই অবসর বয়সে নানা রকম রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। এ কারণে আমরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আজীবন রেশন দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার কাজও হাতে নেয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এ দেশের প্রতিটি ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে বিনা পয়সায় ঘর তৈরী ও জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’
সরকারের লক্ষ্য একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সকল ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়টা হলো আমাদের উন্নয়নের গতি কিছুটা হলেও শ্লথ হয়ে গিয়েছে। করোনা ভাইরাসের অভিঘাত, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশনের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। এই মন্দা মোকাবেলায় এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’