নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীতে মাজেদ মিয়া নামে এক প্রবাসীর ১৮ বছরের উপার্জিত ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ বাড়ী বিক্রির আরো ২৫ টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তারই আপন ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। প্রবাস জীবনের উপার্জিত অর্থ ও সবশেষ সম্বল বাড়ী বেচা টাকা লুট করে নেওয়ায় সর্বস্ব হারিয়ে অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছে প্রবাস ফেরত মাজেদ খান।
টাকা আত্মসাদ ও লুটের অভিযোগে নরসিংদী জজ আদালতে পৃথক দুটি মামলা চলমান রয়েছে। টাকা আত্মসাদের মামলাটি দায়ের করা হয় নরসিংদীর বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ও লুটের ঘটনায় মামলাটি দায়ের হয় নরসিংদীর বিজ্ঞ (সিআর) আমলী আদালতে।
অভিযোগকারী মাজেদ খান নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের ছগরিয়াপাড়া গ্রামের সাহাজ উদ্দিন খান এর ছেলে এবং অভিযুক্ত শামিম খান তারই আপন ছোট ভাই।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী মাজাদ খান ২০০০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ বছর সৌদি আরবে প্রবাস জীবন যাপন করে। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল এই ১০ বছরে প্রবাসী মাজেদ খান ডাচ বাংলা ব্যাংক নরসিংদী শাখা ও ওয়েস্টার্ন ব্যাংক নরসিংদী শাখায় তার ছোট ভাই শামীম খানের একাউন্টে উপার্জিত ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাঠায়। ২০১৮ সালে মাজেদ খান দেশে ফিরে আসলে ছোট ভাই শামীম খানের কাছে পাওনা এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা ফেরত চাইলে সে তালবাহানা করতে থাকে। এভাবে কেটে যায় দুই বছর। পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নজরে আনে ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় বিষয়টির কোন সূরাহা না হলে অতঃপর আদালতের শরণাপন্ন হয় অসহায় মাজেদ খান।
এদিকে আদালতে শামীম খানের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে তার বড় ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ছোট ভাইয়ের আক্রোশ থেকে নিজের জানমালের হেফাজত করতে বাড়ি বিক্রি করে শ্বশুরবাড়ি করিমপুরে গিয়ে উঠে মাজেদ খান।
গত ২০২১ সালের ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামীম খান, করিমপুর এলাকার পারুল বেগম, মোস্তাকিন, রমজান ও ইয়াসিনসহ আরো ৭-৮ জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে মাজেদ খানের করিমপুরস্থ বসত বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়। সেখানে তারা মাজেদ খানের স্ত্রী কে গালমন্দ করতে থাকে এবং জোরপূর্বক ঘরের ভিতর প্রবেশ করে ড্রপ এর তালা ভেঙে বাড়ি বিক্রয়ের ২৫ লাখ টাকা এবং মেয়ে ও স্ত্রীর ৭ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে আসে। লুটের ঘটনায় মাজেদ খান থানায় অভিযোগ করলেও থানা কর্তৃপক্ষ তা আমলে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়। পরে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর নরসিংদীর (সিআর) আমলী আদালতে এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মাজেদ খান বলেন, আমি আমার প্রবাস জীবনের উপার্জিত অর্থ ও বাড়ি বিক্রয়ের টাকা পয়সা খোয়া দিয়ে বর্তমানে মানবতার জীবন যাপন করছি। আদালতে আমি ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
এব্যাপারে ছোট ভাই শামীম খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার ব্যাপারে আনীত সকল অভিযোগই মিথ্যা। আপনারা এলাকায় এসে খোঁজ নিতে পারেন এলাকার মানুষই আমার এবং আমার ভাই ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে। আসলে তিনি ঢাকা ক্লাবে গিয়ে জুয়া খেলতান এবং এই জুয়াই তাকে সর্বশান্ত করেছে।