পলাশ প্রতিনিধি
নরসিংদীর পলাশে জমি সংক্রান্ত প্রতিবেশী দুই পরিবারের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই নারীসহ ৭ জন আহত হয়েছে। শনিবার (১৪ মে) সকালে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের জয়নগর গ্রামে মো. হোসেন মিয়ার ছেলে মো. বারেক মিয়ার (৫০) ও আবদুর রুহুলের ছেলে মজিবুর রহমানের (৪৫) এই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরে দুই পরিবারের পক্ষ থেকেই পলাশ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সংঘর্ষে মো. বারেক মিয়ার পরিবারের এক নারীসহ ৬ জন ও মজিবুর রহমানের পরিবারের একজন নারী আহত হন। আহত ৭ জনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এক শতাংশ জমিকে ঘিরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই জমিটুকুতে ভোগদখলে আছেন মো. বারেক মিয়ার পরিবার। কিন্তু প্রতিবেশী মজিবুর রহমানের পরিবারের দাবি ওই জমি তাদের। এ নিয়ে নরসিংদীর আদালতে মামলাও রয়েছে । তবে গত কয়েকদিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছিল।
শনিবার সকালে দুই পরিবারের দুই নারী একটি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যান। কে আগে পানি নেবেন এই নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির ’এক পর্যায়ে জমি’ নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি চলে আসে। পরে দুই পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে যোগ দিলে প্রথমে হাতাহাতি এবং তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় হাতে কাছে যে যা পেয়েছে তা দিয়েই পরষ্পরকে পিটাতে থাকেন। এতে বারেক পক্ষের চাঁন মিয়া, রনি মিয়া, ফারুক মিয়া, রমজান মিয়া, সাদেকুল মিয়া ও মাহমুদা আক্তার এবং মজিবুর পক্ষের সেহরুন আক্তারসহ মোট ৭ জন আহত হন। এসময় আশপাশের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) লোপা চৌধুরী জানান, পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর এলাকা থেকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে মোট ৭ জন আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে চাঁন মিয়া নামের একজন আহত ব্যক্তিকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করতে মো. বারেক মিয়া ও মজিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সাবের উল হাই জানান, ওই এক শতাংশ জমির মালিকানা দ্বন্দ্বের বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমরা একাধিকবার বসেছিলাম। পরে বিষয়টি আদালতের হাতে চলে গেলে আমরা আর এ বিষয়ে মাথা ঘামাইনি। এখন যেহেতু সংঘর্ষের মত ঘটনা ঘটেছে, তাই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে কি করা যায় দেখব।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, সংঘর্ষে ৭ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এই ঘটনায় দুই পক্ষই আমাদের কাছে এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।