নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে বর্তমানে অনেকটা ভোগান্তি আর হয়রানী ছাড়াই সেবা মিলছে। সংযুক্ত হয়েছে ডিজিটাল সেবা। পাশাপাশি দালালদের দৌরাত্ম নেই বললেই চলে। দালাল ছাড়াই যে কোন ব্যক্তি যে কোন সময় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সরাসরি কর্মকর্তার কাছ থেকে পাসপোর্ট বিষয়ে যে কোন সেবা নিতে পারছেন। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে নানা ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আর এই সবটুকু পিছনের নেপথ্যে কারিগর নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক মো: জামাল হোসেন।
জেলার রায়পুর উপজেলার বশির মোল্লা বলেন, আমি পাসপোর্ট অফিস থেকে একটি মোবাইলে মেসেজ পেয়েছি। সেটিতে বলা হয়েছে যে আমার পাসপোর্ট তৈরি হয়ে অফিসে জমা রয়েছে। সেই পাসপোর্ট দ্রুত সংগ্রহ করার জন্য বলা হয়েছে। এতটা সহজ এখন পাসপোর্ট হয় আমি কল্পনাও করতে পারিনি। খুব অল্প সময়ে সহজভাবে আমি পাসপোর্ট এর কাজ শেষ করেছি।
মনোহরদী উপজেলার সেবাগ্রহিতা রিপন সরকার বলেন, আমার পূর্বের পাসপোর্টের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের কিছু তথ্যগত অমিল ছিলো। পরবর্তিতে দালাল ছাড়াই আমি অফিসের বড় স্যার উপ-পরিচালক মো: জামাল হোসেন কাছে বিষয়টি জানালে তিনি আমার সকল সমস্যা সমাধান করে দ্রুত আমার নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়েছেন। আমি স্যারের ব্যবহারে অভিভ’ত হয়েছি। এমন কর্মকর্তা যদি দেশের প্রতিটি সরকারি অফিসে থাকতো তাহলে আমাদের দেশের চিত্র অনেক আগেই বদলে যেতো।
নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. জামাল হোসেন বলেন, পাসপোর্ট অফিস নিয়ে দেশের মানুষের মাঝে যে নেতিবাচক ধারণার জন্ম নিয়েছে সেই নেতিবাচক ধারণা থেকে কিছুটা ইতিবাচক ধারণার অবতারনা করতে আমি এই অফিসে যোগদানের পর থেকেই চেস্টা করে আসছি। নিজ ব্যক্তি উদ্যোগে গ্রহণ করেছি কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
যেমন যে সব গ্রাহকরা দীর্ঘদিন তাদের পাসপোর্ট গ্রহণ করছেন না তাদের একটি তালিকা করেছি। সেই সেগুলো দ্রুত কোন ভোগান্তি চাই শেষ করে এবং তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। এছাড়া অসুস্থ্য, বয়স্ক ও নারীদের পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রাধান্য প্রদান করে আসছি। প্রতিদিন অফিস চলাকালীন সময় থেকে অফিস শেষ হওয়া পর্যন্ত যে কোন মানুষের জন্য আমার কক্ষের দুয়ার সব সময় খোলা রাখি যেন সমাজের নিম্ম পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের যে কোন মানুষ আমার দপ্তর থেকে কোন প্রকারের ভোগান্তি আর হয়রানী ছাড়াই সেবা নিতে পারে সেই পরামর্শ প্রদানের চেস্টা করে আসছি।
তিনি আরো বলেন, পাসপোর্ট অফিসের নির্ধারিত কোন দালাল নেই কিন্তু অফিসের বাহিরে অনেক কথিত ব্যক্তি অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষদের নানা চক্রের ফাঁদে ফেলে নিজেদের নানা ভাবে জাহির করে ফায়দা হাসিলের চেস্টা করে আসছে। আর এই সব মানুষের ফাঁদে পরে অনেক অসচেতন মানুষই অযথাই ভোগান্তি আর হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
কিন্তু যারা সচেতন মানুষ তারা কিন্তু কোন সমস্যা হলেই সরাসরি আমার কাছে আসেন। আমি সব সময় আমার অফিসের সকল স্টাফদের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে অনন্ত অফিসের অভ্যন্তরীন পরিবেশটি দালাল মুক্ত রাখার চেস্টা করে আসছি। এছাড়াও ডিজিটাল কিউ ম্যানেজমেন্ট , সিরিয়াল মেইনটেন, পুরুষ- মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা কাউন্টার ব্যবস্থা। তথ্য কেন্দ্র সেবা চালু। পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় ঘরে বসেই সরকারি নাম্বার হটলাইন ১৬৪৪৫ ফোন করে সমস্যার সমাধানের বিষয়ে সাধারণ মানুষদের উদ্বুদ্ধ করা। পাসপোর্ট অফিসে সকলের বসার ব্যবস্থা, সুন্দর একটা পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করছি।