নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদী ও এর আশপাশ এলাকায় সরব রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে তোলপাড় সামাজিক এই যোগাযোগ মাধ্যমটি।
আজ রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের খুলে বসলেই চোখের সামনে ভেসে আসে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত আংশিক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া ও শুভেচ্ছা জানানোর দৃশ্য। তাদের সমর্থক ও শুভাকাঙ্খিদের শুভেচ্ছা আর শুভকামনায় ছেয়ে গেছে গোটা ফেসবুকের পাতা।
পাশাপাশি সম্মেলনে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীদের সম্মেলনের আয়োজক কমিটি অবমূল্যায়ন করে অপমানিত করায় জেলার সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহলে উঠে নিন্দার ঝড়।
তিন বছর মেয়াদী জেলা কমিটি গঠন করা হলে বিগত কমিটির দীর্ঘ সাড়ে ৭ বছর পর গতকাল শনিবার ঘোষনা দেওয়া হয় আংশিক কমিটি। শনিবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে জাকজমক পূর্ণ আয়োজনের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে এ সম্মেলন। জাকজমকপূর্ণ এই আয়োজনের শেষ সময়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা আশাহত মন নিয়ে সম্মেলন স্থল থেকে বাড়ী ফিরে গেছে।
নরসিংদীর মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শেষে, সকলে স্তব্ধ হতাশ। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ভেঙ্গে চুরমার। কিন্তু কারোই কিছু বলার মত সেই ভাষা বা সাহস ছিল না। আর তা হতে পারে আশাভঙ্গ হওয়ায় বা পেশীশক্তির ভয়ে
সম্মেলনকে ঘিরে জেলা জুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলো ব্যাপক উচ্ছ্বাস। সম্মেলনের শেষ ভাগে এসে পূর্বের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী এই দুজনেরই ভার মুক্ত করে দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা দিলে নেতাকর্মীদের সেই উচ্ছ্বাস ধুলায় মিশিয়ে যায়। তৃণমূলের মতে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের সাথে ভারচুয়াল মিটিং করে তথাকথিত কিছু কেতাদুরস্ত ভাবনার পরিবর্তন ছাড়া এই সম্মেলন দলের জন্য কোন সুফল বয়ে আনতে পারেনি বলে সকলের আফসোস!
এদিকে মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম মাঠে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা সম্মেলনের সংবাদ সংগ্রহ, ভিডিও ও স্থির চিত্র ধারণ করতে আসলে সেখানে তাদের জন্য নির্ধারিত কোন আসন রাখা নেই এমনটাই নজরে আসে। সাংবাদিক প্লে-কার্ড লাগানো নির্ধারিত আসন গুলোতে সম্মেলনের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবীরা আগ থেকেই দখল করে বসে ছিল। এ অবস্থায় সম্মেলনের আয়োজক কমিটির কাছে গণমাধ্যম কর্মীরা তাদের বসার স্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে সামনের সারিতে মঞ্চের বাম পাশে মাটিতে লাল রঙের মকমলের কার্পেট পাতা স্থানটিতে তাদেরকে বসার জন্য দেখিয়ে দেয়।
সংবাদের গুরুত্ব বিবেচনা করে অজ্ঞতায় গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানেই বসে তাদের সংবাদ সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন করেন। সম্মেলন শেষে রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের মাটিতে বসা এ দৃশ্যের ভিডিও ও স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে অল্প সময়ের তা ভাইরাল হয়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে আখ্যায়িত গণমাধ্যম কর্মীদের মাটিতে বসা এদৃশ্য জেলার সাংবাদিক সংগঠনসহ সাধারণ গণমাধ্যম কর্মী ও সচেতন সমাজকে নাড়া দেন। জেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে। এর প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা জানিয়ে স্থানীয় কয়েকটি মিডিয়ায় কালো পতাকা প্রদর্শন করা হয়।