মনিরুজ্জামান,নরসিংদীঃ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় বিয়ে বাড়িতে গিয়ে দৈনিক অধিকার পত্রিকার রায়পুরা উপজেলা প্রতিনিধি ও রায়পুরা উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ তন্ময় কুমার সাহা হামলার শিকার হয়েছে।
শুক্রবার (২০ মে) বিকেলে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার সাপমারা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে আহত সাংবাদিক তন্ময় কুমার সাহা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,কনে পক্ষের হয়ে রায়পুরা পৌর মেয়রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঠিকাদার রতন হঠাৎ করেই বর পক্ষের লোকজনের উপর চড়াও হয়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে শুরু করে।
এতে করে সাংবাদিক তন্ময় কুমার সাহাসহ পাত্র পক্ষের একাধিক লোক আহত হয়। এসময় পাত্র পক্ষের লোকজন কিংকর্তব্যবিমুর হয়ে অনেকেই পালিয়ে আসে। পরে বিষয়টি রায়পুরা থানা পুলিশকে জানানোর পর উল্টো ছেলে পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
হামলাকারী রতন মেয়রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও থানার পাশে বাড়ি হওয়ার সুবাদে প্রশাসন তার পক্ষে কাজ করছে বলে ও জানান তারা।
আহত সাংবাদিক তন্ময় কুমার সাহার সাথে রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার বিকেলে আমার বন্ধু পারভেজের বিয়ের বরযাত্রী নিয়ে তার শ্বশুর বাড়ি সাপমারা এলাকায় যাই। বরযাত্রী যাওয়ার পূর্বেই কনের বাড়ির খাবার শেষ হয়ে যায়। এ নিয়ে বর ও কনের পিতার মধ্যে বাকবিতন্ডা ও কথা কাটাকাটি হয়।
পরে আমরা বন্ধুরা মিলে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে পরিবেশ স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হই। কিন্তু ঘটনার অনেক পর রতন নামে এক ব্যক্তি এসে কোনপ্রকার কথাবার্তা ছাড়া বর পক্ষের লোকজনকে এলোপাথাড়ি বাঁশ দিয়ে পেটানো শুরু করে। একপর্যায়ে সে আমার দিকে তেড়ে এসে আমার মাথায় সজোড়ে বাঁশ দিয়ে আঘাত করলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পরে লোকজন আমাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে।
মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা সেইসাথে বমি ও হয়েছে।
ডাক্তার সিটিস্ক্যান করানোর পরামর্শ দিয়েছে তাই নরসিংদী থেকে সিটিস্ক্যান করিয়ে রায়পুরার দিকে রওনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আঘাত কারী তার পূর্বের পরিচিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে রায়পুরা পৌর মেয়রের সাথে চলাফেরা করে, পেশায় একজন ঠিকাদার এবং আমার পূর্ব পরিচিত।প্রায় দুই বছর পূর্বে একটি রাস্তার কাজের মান খারাপ হলে এব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে তার সাথে আমার কথাকাটাকাটি হয় এ নিয়ে সুযোগ বুঝে আজ সে আমার উপর হামলা চালিয়েছে।
এব্যাপারে রায়পুরা থানার তদন্ত অফিসার তার জবানবন্দি নিয়েছেন ।
এঘটনায় পাত্র পক্ষের আরো একজন মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মাথায় ৭টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে ও জানান তিনি।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে হামলাকারীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি নিয়ে আমরা বেশ বিব্রতকর অবস্থায় আছি। বর ও কনে পক্ষের মারামারির কারণে বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় কনে পক্ষ মামলার হুমকি দিচ্ছে। এব্যাপারে আহত সাংবাদিক ও পাত্র পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ও জানান তিনি।