নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীতে বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে সিত্রাং ঝড়ের কবলে মেঘনা নদীতে আটকা পড়া নারী শিশুসহ ৩৭ জন বরযাত্রীকে উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ। সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ২টায় নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল করিমপুরের জগতপুর এলাকার উত্তাল মেঘনা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমিন’র স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার নোয়াকান্দা গ্রামের মৃত সোরাফ মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২৩) সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালির মৃত হাসেম মিয়া মেয়ে মোসাম্মৎ সাবিনা আক্তার কে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ঝড় বৃষ্টির মধ্যে নৌকা যোগে বিয়ে করতে যায়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল ৫টায় নববধূসহ বরযাত্রী নৌকা যোগে নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে বরযাত্রীর সহ নৌকাটি সিত্রাং ঝড়ের কবলে পড়ে। এসময় মেঘনা নদী ছিল উত্তাল ও বেসামাল। বেপরোয়া ঢেউয়ের মাঝে মেঘনা ও শাখা নদীর মোহনায় করিমপুরের জগৎপুর সংলগ্ন অংশে নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে ঘন কচুরিপানায় আটকে পড়ে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নারী শিশুসহ ৩৭ জন বরযাত্রী তাদেরকে উদ্ধার করার জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯ এ পুলিশ সহায়তায় ফোন দেয়। বিষয়টি জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হলে করিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই কামরুল হাসান পিপিএমকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম বিপিএম।
পুলিশ সুপারের নির্দেশ পেয়ে করিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই কামরুল হাসান ও তার টিম স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় একটি বড় ইঞ্জিন বোটের ব্যবস্থা করে সংকটাপন্ন ৩৭ যাত্রীকে উদ্ধারের লক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওয়ানা হয়। উত্তাল স্রোত ও ঝড়ো হাওয়ায় এবং কচুরিপানার কারনে বার বার তাদের তীরের দিকে ঠেলে নিয়ে আসলেও কিছুতেই হাল ছাড়েনি উদ্ধার টিমের পুলিশ সদস্যরা। বহু বিপত্তি ঠেলে পুলিশ সেখানে পৌছে দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে রাত পৌনে ২টার দিকেনদীতে আটকা পড়া নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৩৭ জন বরযাত্রীর সকলকে জীবত উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে পুলিশ।
এসময় বর কনেসহ সকল বরযাত্রীগণ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা পুলিশের পদক্ষেপে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। পরে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান।