আবুল কাশেম, নরসিংদী
নরসিংদীর খোদাদিলা গ্রামে যেন ঈদ আনন্দ। গ্রামবাসীর খুশি যেন ধরে না। ‘ঝগড়া নয় ,শান্তি চাই’ এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে ৫ শতাধিক গ্রামবাসী বাড়ী ফিরে আসায় পুরো গ্রামজুড়ে খুশির বাতাস বইছে । নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ানো মানুষেরা বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে মুচলেকা দিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসায় এ ঘটনা ঘটে।
এসময় প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রামবাসি আর কোনদিন ঝগড়া বিবাদে জড়িত হবে না এ মর্মে মুচলেকা দিয়ে গ্রামে পুনরায় ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে দুই ইউপি মেম্বার প্রার্থীদের কর্মীসমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনপূর্ব সহিংসতায় ৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি রেখে স্বপন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে নির্বাচনের আগেই আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহর প্রায় তিন হাজার কর্মী সমর্থক গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করলে পূর্ব থেকে এলাকায় থাকা অপর গ্রুপ (চেয়ারম্যান দিপু সমর্থক ) ভয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। প্রায় দেড় মাস বাড়িঘর ছেড়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতে থাকে।
এ অবস্থার অবসান ঘটাতে গ্রামের মাতব্বররা উদ্যোগী হয়। গ্রামবাসীদের মধ্যে ঝগড়া ও প্রতিহিংসা পরিহার করে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে মাতব্বরদের কাছে মুচলেকার মাধ্যমে খোদাদিলা গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকদেরকে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন।
গ্রামছাড়া মানুষগুলোকে ফিরিয়ে আনতে আব্দুল কাইয়ুম সরকার, অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ, হাজী আব্দুল মালেক মেম্বার, ফাহীম সিদ্দীকী ,জয়নাল সরকার ,মোস্তফা মিয়া ,রুবেল আহমেদ ,সেলিম মিয়া প্রমুখ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
অপরদিকে যারা বাড়িতে এসেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাজী হাসেন আলী, শহিদ মিয়া, নজর পাগলা, হালিম, হানিফা প্রমুখ। গ্রামের মাতব্বর ও শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এ মহতী উদ্যোগের ফলে গ্রামের সকলে ঝগড়া-বিবাদ ভূলে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গ্রামের উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে এলাকার সাধারন জনগন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।