নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীতে ২২ বছরের এক যুবতিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দুদিন আটক রেখে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে ওই যুবতি কোন রকমে ছাড়া পেয়ে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবে এসে হাজির হয়ে তার সাথে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও শারীরিক চিত্র সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
এঘটনাটি তাৎক্ষণিক ভাবে নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠানকে অবগত করেন নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মো: শাহাদাৎ হোসেন রাজু। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের পরামর্শে মামলা দায়েরের জন্য ধর্ষীতা ওই যুবতিকে ক্লাবে অপর এক নারী সদস্যকে সাথে দিয়ে থানায় পাঠানো হয়।
পরে এ ঘটনায় ধর্ষীতা নিজে বাদী শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়ার মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে ধর্ষক আল আমিনসহ আরও দুই জনের নাম উল্লেখ পূর্বক নারী ও শিশু নির্যাতনের আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপর দুজন হলেন আল আমিন(২), ও হৃদয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় ভিকটিম তার কর্মক্ষেত্র ন্যাশনাল প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পথে নরসিংদী শহরের উপজেলা মসজিদের সামনের গলি দিয়ে ঢুকার মুখে পিছন দিক থেকে তার মুখ চেপে ধরে ৩/৪ জন ছেলে তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নেয়। সেখান থেকে তাকে নরসিংদীর পশ্চিম কান্দাপাড়াা এলাকার ব্রিটিশ বাংলা হাসপাতালের পশ্চিমে একটি গলি ভিতর মামলার প্রধান আসামি আল-আমিন দের বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে নিয়ে তাকে শারীরিক মেলামেশা করতে বলে। এতে সে রাজি না হওয়ায় আল-আমিন তাকে শারীরিক নির্যাতন করে টানা ২ দিন বদ্ধ ঘরে আটকে রাখে এবং তাকে একাধিক বার ধর্ষণ করে এবং ভিডিও চিত্র ধারণ করে। সে তার পাশবিকতা থেকে রক্ষা পেতে ডাক চিৎকার করলেও বাড়িতে কোন লোকজন না থাকায় কেউ এগিয়ে আসেনি। শনিবার সকালে আল আমিন বাহিরে গেলে ভোর ৭ টার দিকে ওই ধর্ষীতা কোন রকমে সেখান থেকে পালিয়ে আসত সক্ষম হয়।
সেখান থেকে পালিয়ে আসার পর রেহেনা নামে এক মহিলা তার মোবাইল ফোনে ফোন করে এঘটনা কারো কাছে প্রকাশ না করার জন্য তাকে হুমকি দেয় এবং মোটা অংকের টাকাও দাবী করে নয়তো ধারণকৃত ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানায়। পরে সে কোথায় যাবে, কার কাছে বিচার চাইবে তার কূল কিনারা ন াপেয়ে অবশেষে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের স্মরণাপন্ন হয়।
এসময় ধর্ষীতা তার এই জীবনের কলঙ্কিত জীবনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষিতার অভিযোগের ভিত্তিতে এজাহার তৈরির পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষিতার মেডিক্যাল পরিক্ষা নীরিক্ষাসহ যাবতীয় আইনী সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াা ভিকটিমকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করাসহ আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে কিন্তু তাদেরকে পাওয়া যায়নি। শীঘ্রই আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে।