নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীতে সদর থানা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ক্ষমতাশীন দলটির এই অঙ্গসংগঠনের দুটি গ্রুপ। এসময় পুলিশের সাথে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সাথে বেশ কয়েকবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে বেশ কয়েকবার হাতাহাতি হয়। পরে দুই গ্রুপকেই প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুটি গ্রুপের সমর্থনপুষ্ট দলটির অঙ্গ দল জেলা ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করছে দুটি পক্ষ। এমপি নজরুল ইসলাম হিরু সমর্থনপুষ্ট পক্ষটি নিয়ন্ত্রণে আছে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন এবং সাধারণ সম্পাদক শাহাজালাল আহমেদ শাওন। সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান সমর্থনপুষ্ট অপরপক্ষের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সংগঠনটির সহ-সভাপতি সারোয়ার হোসেন ফয়সাল এবং শিব্বির আহমেদ শিবলী।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের ছাপানো প্যাডে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে সদর থানা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিকে ‘ভুয়া’ এবং সাংগঠনিক নিয়মবহির্ভুত উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ফয়সাল-শিবলী গ্রুপ। তাদের মানববন্ধন শেষ পর্যায়ে রিমন-শাওন গ্রুপের সদস্যরা এসে একই স্থানে বিক্ষোভ করে। এতে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় পুলিশ সংর্ঘষের আশঙ্কায় দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকবার পুলিশের সাথে হাতাহতিতে জড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের একটি পক্ষে নেতৃত্বে থাকা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘সদর থানা ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী বিভিন্ন মামলার আসামি, বিবাহিত ও মাদকাসক্ত। ত্যাগী নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করে অপরিচিতদের কমিটিতে নিয়ে আসা হয়েছে। এমনকি কোনো সম্মেলন ছাড়াই পকেট কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ কমিটি বাতিল না করলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
অন্যদিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হক রিমন বলেন, ‘তাদের (অপর গ্রুপের) অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে দিতে পারত। সেটা না করে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে সংগঠনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। তারা সদর থানা সভাপতি একমির বিরুদ্ধে যে বিবাহিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন, কাবিননামাসহ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নেব। তবে, কারো ইন্ধনে ছাত্রলীগের নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও প্রহসনমূলক ষড়যন্ত্র করা হলে জেলা কমিটি তা মেনে নেবে না। দরকার হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, একই স্থানে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে হাতাহাতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই।’