নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীতে হত্যা মামলা ও গাছে বেধে তুরুণীকে নির্যাতনের পৃথক দুটি ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী জেলা পুলিশ। রবিবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মাধবদীতে পায়ের সামনে থুতু ফেলাকে কেন্দ্র করে মোবারক নামে এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় ৪ জন এবং নরসিংদীর গনেরগাও এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তরুণীকে আম গাছের সাথে বেধে নির্যাতনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মাধবদীতে কিশোর হত্যার ঘটনায়, এজহারনামীয় আসামী আরাফত (১৯), অলিউল্লাহ (২১), রাহাত (১৮) ও অলি (১৮)। অপরদিকে তরণীকে নির্যাতনের ঘটনায় গনেরগাও গ্রামের মজিবুর রহমান (৬০)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন জানান, গত ১০ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের মোবারক হোসেন শাহীন নামে এক কিশোর নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় অবস্থিত তার কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রাস্তার পাশে থুতু ফেলে সে। সেই থুতু ইয়াসিন মিয়া নামে স্থানীয় এক যুবকের পায়ের সামনে পড়লে এটা নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাধবদী থানাধীন বিরামপুর এলাকায় আবারও তর্ক ও ঝগড়া হয়। এসময় ইয়াসিন ও তার তিন সহযোগী মোবারক হোসেন শাহীন নামে ওই যুবককে লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে নিস্তেজ হয়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান মোবারকের অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে এগারোটার দিকে মারা যায় মোবারক।
এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে মাধবদী থানা একটি হত্যা মামলা করলে রবিবার দিবাগত রাতে পুলিশ নরসিংদীর মাধবদী এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেন বলে জানান তিনি।
অপরদিকে নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দি ইউনিয়নের গনেরগাও এলাকার জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ১০ নভেম্বর সকাল অনুমান ১০টার দিকে মজিবুর রহমান, মো. নাইম, মো. নাজমুলসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জন জনৈক হযরত আলীর বাড়ীর আম গাছের সাথে এক তরুণীকে বেধে মারপিট, নির্যাতন ও শ্লিলতাহানির ঘটনা ঘটায় এলাকার কয়েজন ব্যক্তি। এ সময় তরুণী ও তার বোনের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে প্রায় ঘন্টাখানেক চেষ্টার পর তাকে আমগাছ থেকে বাধন খুলে মুক্ত করেন। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এব্যাপারে গত ১৩ নভেম্বর নরসিংদী সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার দায়ের পর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালায়। গত রবিবার রাতে নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশ গনেরগাও গ্রামের মজিবুর রহমান (৬০) কে গ্রেফতার করে। এছাড়াও অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানায়।