সব
facebook raytahost.com
নরসিংদীতে অচেতনের ডাক্তার অথচ করচ্ছেন সার্জারি | Holypennews

নরসিংদীতে অচেতনের ডাক্তার অথচ করচ্ছেন সার্জারি

নরসিংদীতে অচেতনের ডাক্তার অথচ করচ্ছেন সার্জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবিশ্বাস্য  হলে সত্যি যে, নরসিংদীতে  অচেতনের  (এনেস্থিসিয়া) একজন ডাক্তার  সার্জন না হয়েও  অথচ জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন অপারেশন করে যাচ্ছেন। পুরো নরসিংদী জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে রয়েছে তার বিচরণ। হ্যা এতোক্ষণ নরসিংদীর  শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট এনেস্থিসিয়া (অচেতন) ডা. মাসুদ’র কথাই বলছিলাম। তার এই সার্জারি করার ঘটনায় যেকোন সময় বড় ধরনে দূর্ঘটনাসহ প্রাণহানীর ঘটতে পারে বলে মনে করছেন জেলার সচেতন মহল।

জানা যায়, প্রায় দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে  ডা. মাসুদ নরসিংদী জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের একজন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। তাই স্বাস্থ্য খাতে জড়িত সকলের সাথেই রয়েছে তার  বেশ সখ্যতা। শুধু নরসিংদীই নয় পার্শ্ববর্তী  নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর,  কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসক হিসেবে ডা. মাসুদের ব‍্যাপক কদর রয়েছে।

দেশের স্বাস্থ্য খাতে উন্নতির সাথে সাথে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল।  আর বিভিন্ন রোগের পরিক্ষা নিরীক্ষা ও প্রষূতিদের সার্জারির উপরই  এইসব ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো মূলত নির্ভর। আর এগুলোতে রোগি বাগিয়ে আনতে প্রত্যন্ত গ্রামসহ প্রায় অধিকাংশ এলাকায় নিযুক্ত করা হয় কমিশন ভিত্তিক এজেন্ট। যারা একটা সিজারের রোগিয়ে নিয়ে আসলে বা পাঠিয়ে দিলেই কমিশন হিসেবে পাচ্ছেন দুই থেকে তিন হাজার টাকা। আবার অনেকে এর চেয়ে বেশীও পায়। ক্লিনিকগুলো মূলত এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন গ্রাম‍ এলাকার পল্লী চিকিৎসক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী পুরুষ ও মহিলা উভয়কে। এদের প্রত্যকেই মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ক্লিনিকগুলো থেকে কমিশন হিসেবে পায় বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

ক্লিনিকগুলোতে অধিকাংশ রোগী গ্রাম এলাকা থেকে আসে বিদায় কোন চিকিৎসক সিজার করবেন, তিনি কি পুরুষ না মহিলা, সার্জন হিসেবে হাত যশ কেমন তা জানার প্রয়োজন হয়না। স্বল্প শিক্ষিত বা অক্ষর জ্ঞানহীন মাএই সব জানার প্রয়োজন নেই। কারণ এসব বিষয়ে তাদের তেমন কোন ধারণা নেই। আর তাই সার্জন নয় এমন ব‍্যক্তিরা প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে সিজার করে যাচ্ছেন। তেমন ডা. একজন অচেতনের চিকিৎসক হলেও তিনি প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬টি সিজার করছেন বলে ক্লিনিকগুলো সূত্রে জানা  যায়। সার্জন না হয়েও বিভিন্ন ক্লিনিকে ডা. মাসুদের প্রতিদিন সার্জারি করার বিষয়টি জেলার সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছেন। সচেতন মহল মনে করেন তার এই সার্জারি করার ক্ষেত্রে যে কোন সময়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনাসহ প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে।  এখানে গত কয়েক মাসে আগে ডা. মাসুদ গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক প্রসূতির সিজার করার সময় নবজাতকের মৃত্যূ হয়। এ ঘটনায় ডা. মাসুদের নামে মামলাও করা হয়।

ক্লিনিকগুলো সূত্রে আরো জানা যায়, ডা. মাসুদকে যদি সিজারের জন্য  ডাকা হয় সেক্ষেত্রে আলাদা করে অচেতনের চিকিৎসক ডাকতে হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্লিনিক ম্যানেজার বলেন, “আরে ভাই মাসুদ স্যার হলেন একের ভিতর দুই। একজনকে দিয়ে দুই কাজ। উনাকে ডাকলে আর এনেস্থিসিয়া ডাক্তারের জন্য  আর কোথাও খোঁজাখুঁজি  করতে হয়না।”

এসময় ওই ক্লিনিকেরই ওটিবয় বলে উঠেন,  “আরে ভাই কি যে বলে মাসুদ স্যার সিজার করেন এটা ভালো কারণ তিনি একজন পাশ করা ডাক্তার। নরসিংদীতে  এমনও কিছু সিজার হয়, যিনি করছেন তিনি কোন ডাক্তার নন বা নার্সও নন, একজন সাধারণ মানুষ মাত্র। শুধু মাত্র ডাক্তারের সাথে থেকে দেখে দেখে শিখেছেন।”

এ ব্যাপারে ডা. মাসুদের সাথে কথা বললে, তিনি সার্জনদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন তাই তিনি সার্জারি করতে পারেন। প্রশিক্ষক হিসেবে নিজের মোবাইল ফোন থেকে সার্টিফিকেটও দেখাতে চাইলেন। একজন সার্জনের মূল্যায়ন আর একজন অচেতনের চিকিৎসকের মূল্যায়ন এক কিনা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আসলে সার্জনের মূল্যায়নটাই বেশী। তাহলে তিনি সার্জন না হয়ে অচেতনের মত বিষয়টাকে বেছে নিলেন কেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে দেশে বর্তমান পরিস্থিতিতে এনেস্থিসিয়া ডাক্তার অভাব রয়েছে। ফলে বর্তমানে এনেস্থিসিয়া ডাক্তারের বেশ কদর তাই এই বিষয়টাকে চয়েজ করি। তিনি জানান, শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ৮ বছর কোন সার্জন ছিলোনা। সে সময় ওই হাসপাতালটিতে তিনিই নাকি সার্জারি করতেন।

শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ফিরোজ শাহীনুর রহমান (ডলার) বলেন, ডা. মাসুদ আমার সময়ে এখানে কোন সিজার করেননি। এর আগে যদি সিজার করে থাকলে তা আমার জানা নেই।

এব্যাপারে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)’র সাবেক সভাপতি ডা. গোলাম দস্তগীর বলেন, একজন এমবিএস ডাক্তার সার্জারি করায় আইনি কোন বাধা নিষেধ নেই। ইচ্ছে করলে যে কোন এমবিএস ডাক্তার তা করতে পারেন। তবে এটা করা ঠিক নয়।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ডা. মাসুদের সার্জারি করার বিষয়ে অভিজ্ঞতা বা কোন সার্টিফিকেট আছে কি না এ বিষয়টি আমি অবগত নই। আর এ বিষয়ে আগে জানতে হবে। তাছাড়া তিনি কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে সার্জারি করেন কিনা সেটাও নিশ্চিত হতে হবে। তাই আমাকে আগে জানতে হবে তিনি  কোথাও  কোন সার্জারি করেন কিনা ।

আপনার মতামত লিখুন :

রায়পুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে দালাল ও মাদক সেবীদের আখড়া

রায়পুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে দালাল ও মাদক সেবীদের আখড়া

সিরাজগঞ্জে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রশিক্ষণ প্রদান

সিরাজগঞ্জে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রশিক্ষণ প্রদান

স্বাস্থ্য সহকারীদের ১১তম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি করে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দাবি

স্বাস্থ্য সহকারীদের ১১তম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি করে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দাবি

চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রত্যাহার

চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রত্যাহার

মাঙ্কিপক্স নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি

মাঙ্কিপক্স নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি

পরপর দুটি মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেলেও হাসপাতালের স্টাফরা জানে না

পরপর দুটি মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেলেও হাসপাতালের স্টাফরা জানে না

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ সারোয়ার খান

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৮৮, তরোয়া, নরসিংদী
ফোনঃ 01711205176 ই-মেইল : mdsaroarkhan@gmail.com
©২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Design & Developed By: Khan IT Host .com